এই যুগে ইন্টারনেট ছাড়া
আমাদের চলেই না। কিন্তু এই ইন্টারনেট চলার জন্য সবচেয়ে প্রয়োজনীয় বস্তুটি হচ্ছে
ডাটা সেন্টার। ডাটা সেন্টার ছাড়া ইন্টারনেট কল্পনা করা যায়না।
বিশ্বকোষের এই পর্বে আমরা
এই ডাটা সেন্টার নিয়ে জানবো। ভিডিও শুরুর আগে অনুরোধ করবো আপনি আমাদের চ্যানেলে
নতুন হলে সাবস্ক্রাইব করুন।
প্রথমেই জেনে নেয়া যাক
ডাটা সেন্টার কি ?
ইন্টারনেটে আমরা যে
সার্ভিসই ব্যবহার করিনা কেন,তা
সাধারনত পরিচালিত হয় একটি কেন্দ্রীয় অবস্হান থেকে,আর এই
কেন্দ্রীয় অবস্হানটির নাম ডাটা সেন্টার । ডাটা সেন্টার ইন্টারনেটের
ইঞ্জিন | ইন্টারনেটের
মাদ্ধমে ডাটা সেন্টার থেকে ডাটা আমাদের ডিভাইসে আসে। যেমন জীবদেহের একক কোষ,
তেমনই ডাটা সেন্টারের একক সার্ভার। গুগলের কথা, আপনি গুগলে নানা কারনেই সার্চ বা অনুসন্ধান করেন, দেখা যাচ্ছে যে, গুগলে ব্যবহারকারীদের নানা
সার্চকে প্রোসেস ও ফল প্রদানের জন্য একসাথে কাজ করছে প্রায় ১০০০ সার্ভার। আবার
জিমেইলের মেইল ব্যবস্হা নিয়ন্ত্রক হিসেবে কাজ করছে একইসাথে সমন্বিতভাবে ১৫০০
সার্ভার। সার্ভারগুলো চলে অলগরিদম এর ওপর। যেমনঃ গুগল সার্চের জন্য গুগল স্পেশাল
গুগল সার্চ অলগরিদম ও কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে যা আর কেউ জানে না।
ডাটা সেন্টার কিভাবে কাজ
করে ?
ধরুন অনলাইনে ইউটিউবে
কোনো ভিডিও দেখবেন,তো আপনি ভিডিওর উপরে ট্যাপ করলেন -তখন সেই কমান্ডটি আমাদের লোকাল
আইএসপি থেকে ইন্টারন্যাশনাল আইএসপি (আইএসপি কি) এর মধ্য দিয়ে চলে গেল
গুগলের ডাটা সেন্টারে, সেখান থেকে সেই রিকুয়েস্ট প্রোসেস
হয়ে ভিডিওটির ডিজিটাল ডাটা আবার একই ভাবে আমাদের ডিভাইসে চলে আসে, এতে আমরা ভিডিওটি দেখতে সক্ষম হই – এটি ঘটে মাত্র মিলিসেকেন্ডের মধ্যে। আর আমাদের কম্যান্ড ও ডাটা
সেন্টারে প্রসেস হওয়া ডাটা ট্রান্সফারের জন্যই ইন্টারনেট কাজ করে।
ডাটা সেন্টারের ও ডাটার
নিরাপত্তা
ডাটা সেন্টার গুলো সবসময়
কঠিন নিরাপত্তা চাদরে ঢাকা থাকে। ডাটা সেন্টারে সকল ডাটাকে বাস্তব ও সফটওয়্যার
ভিত্তিক ২ধরণের নিরাপত্তা দেয়া হয়ে থাকে। যাতে কোনো প্রকার সামান্য তথ্যও যেন চুরি
না হয়। গুগল, ফেসবুক এর মত ডাটা সেন্টারে যেখানে ব্যবহারকারীর অনেক গুরুত্বপূর্ন
তথ্য জমা থাকে। এক্ষেত্রে ডাটা সেন্টার ইঞ্জিনিয়ারদের খুবই সুরক্ষা অবলম্বন করতে
হয়। এসব ডাটার ব্যাকআপ এর জন্যও সাধারনত ডাটা সেন্টারে আলাদা সার্ভার রাখা হয়।
শুধু চুরি নয়, কোনো ভাবে যেন ডাটা নষ্ট না হয় তার দিকেও
লক্ষ্য রাখতে হয়। কোনো কারনে যদি কোনো চলমান সার্ভারের হার্ডড্রাইভে বা এসএসডি
ড্রাইভে সামান্যতম সমস্যাও পরিলক্ষিত হয়, তবে সে
হার্ডড্রাইভের ডাটা অন্য ভালো হার্ডড্রাইভে রিস্টোর করে নতুন হার্ডড্রাইভ সেটাপ
করা হয়। গুগলের মত কোম্পানিতে পুরাতন বা নষ্ট স্টোরেজ ড্রাইভগুলোকে নষ্ট করে ফেলা
হয়, যেনো কেউ কোন ব্যবহারকারীর সামান্যতম ডাটাও চুরি করতে
না পারে। প্রতিটি ডাটা সেন্টারে সার্ভারগুলো এমনভাবে যুক্ত থাকে যে, এখানে কোন একটি সার্ভারের সমস্যা হলে বাকিগুলোর কিছু হয়না।
ডাটা সেন্টারকে কিন্তু
আবার ২৪ ঘন্টা এবং সপ্তাহের ৭ দিনই চালু রাখতে হয়। আর এতে করে প্রচুর পরিমানে
বিদ্যুত খরচ হয়। আমেরিকায় গুগলের ডাটা সেন্টারের জন্য সম্পূর্ণ নিজস্ব
পাওয়ারস্টেশন ব্যবহার করা হয়,যা থেকে এখানে সবসময় নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুত দেয়া হয়,
আবার ব্যাকআপ বিদ্যুত এর ব্যবস্হাও রাখতে হয়। গুগলের সারাবিশ্বে
১৩ টি বড় বড় ডাটা সেন্টার রয়েছে এবং যাকে পাওয়ার দিতে সবমিলে দিনে পাওয়ারস্টেশন বা
প্লান্টগুলো থেকে ২০০ টন কার্বন ডাইঅক্সাইড নির্গত হয়। এতগুলো উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন
সার্ভার গরম হবে নিশ্চয়ই! তাই বড় বড় সব ডাটা সেন্টারে কুলিং এর জন্য ব্যাপক
ব্যাবস্হা থাকে। কিছু ডাটা সেন্টার হয় শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত, আবার গুগলের মত বড় বড় ডাটা সেন্টারে থাকে মাকড়াসার জালের মত ওয়াটার
কুলিং সিস্টেম | এর বিকল্পের জন্য পরীক্ষামূলকভাবে
মাইক্রোসফট সমুদ্রেরর পানির নিচে ছোট ছোট ডাটা সেন্টার বসিয়েছে |
আশা করি ডাটা সেন্টার
জিনিসটা কি তা সম্পর্কে ভালো একটা ধারনা পেয়েছেন।তো নিচে মতামত জানাতে ভুলবেন না।
0 Comments