ফজলুর রহমান খানের (এফ. আর. খান) জন্ম ১৯২৯ সালের ৩রা এপ্রিল মাদারিপুর জেলার শিবচর উপজেলায় তার

তিনি তৎকালীন আহসানউলাহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ (বর্তমানে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়) থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেন। মূল্যায়নে তিনি প্রথম শ্রেণীতে প্রথম স্থান অধিকার করে ১৯৫২ তে যুগপৎ সরকারী বৃত্তি ও ফুল ব্রাইট বৃত্তি নিয়ে তিনি পি এইচ ডি ডিগ্রি অর্জনের উদ্দেশ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গমন করেন ৷ সেখানে ইউনিভার্সিটি অফ ইলিনয় অ্যাট আরবানা শ্যাম্পেইন থেকে স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ারিং এবং তত্ত্বীয় ও ফলিত মেকানিক্স-এ যুগ্ম এম এস করার পর ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেন। দেশে ফিরে শিক্ষক হিসেবে বুয়েটের অধ্যাপকের পদে নিযুক্ত হন। ১৯৫৫ সালে তিনি শিকাগো শহরের স্কিডমোর, ওউইং ও মেরিল নামের প্রকৌশল প্রতিষ্ঠানে যোগ দেন। ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জনের পর ১৯৫৬ সালে দেশে ফিরে আহসানউল্লাহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে পূর্ব পদে যোগদান করেন

পরবর্তীতে আমেরিকার স্থাপত্য প্রতিষ্ঠান স্কিড মোর এর আমন্ত্রণে যুক্তরাষ্ট্র গিয়ে এ কোম্পানীর শিকাগো অফিসের পরিচালক হিসেবে যোগদান করেন ৷ পাশাপাশি তিনি আমেরিকার ইন্টারন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজি এর স্থাপত্য বিভাগে অধ্যাপক পদে অধিষ্ঠিত হন । সেখানে পরে তিনি প্রফেসর এমিরিটাস হয়েছিলেন

এফ. আর. খান মুসলিম স্থাপত্য বিষয়ের উপর নানা ধরনের গবেষণা করেছেন ৷ তিনি Tube in Tube নামে স্থাপত্য শিল্পের এক নতুন পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছিলেন যার মাধ্যমে অতি উচ্চ (কমপক্ষে একশত তলা) ভবন স্বল্প খরচে নির্মাণ সম্ভব ৷ গগনচুম্বী ভবনের উপর সাত খন্ডে প্রকাশিত একটি পুস্তকের তিনি সম্পাদনা করেন ৷

তিনি ১৯৭২ সনেইঞ্জিনিয়ারিং নিউজ রেকর্ড‘-এ ম্যান অব দি ইয়ার বিবেচিত হন এবং পাঁচবার স্থাপত্য শিল্পে সবচেয়ে বেশী অবদানকারী ব্যক্তিত্ব হিসেবে অভিহিত হবার গৌরব লাভ করেন (৬৫,৬৮,৭০,৭১,৭৯ সালে)৷ ১৯৭৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল একাডেমি অফ ইঞ্জিনিয়ারিং এর সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৭৪ সনে আমেরিকারনিউজ উইকম্যাগাজিন শিল্প ও স্থাপত্যের উপর প্রচ্ছদ কাহিনীতে তাঁকে মার্কিন স্থাপত্যের শীর্ষে অবস্থানকারী ব্যক্তি হিসেবে বর্ণনা করে ৷ স্থপতি ড. এফ. আর. খান আন্তর্জাতিক গগনচুম্বী ও নগরায়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন ৷

তার অবদানগুলোর মধ্যে রয়েছে

সিয়ার্স টাওয়ার (Sears Tower) এর নকশা প্রনয়ন
জন হ্যানকক সেন্টার এর নকশা। (১০০ তলা)
জেদ্দা আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর
হজ্ব টার্মিনালের ছাদ কাঠামো। (৫০,০০০ বর্গফুট)
মক্কা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য নকশা
ডাকটিকিট



১৯৯৯ সালে ফজলুর রহমান খানের স্মরণে বাংলাদেশ ডাক বিভাগ একটি ডাকটিকিট প্রকাশ করেছে। ৪ টাকা মূল্যমানের এই টিকিটটিতে রয়েছে ফজলুর রহমান খানের আবক্ষ চিত্র, আর পটভূমিতে রয়েছে সিয়ার্স টাওয়ারের ছবি

বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসের দিন ২৬শে মার্চ, ১৯৮২ সনে জেদ্দায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন ৷ মৃত্যুর পর তার দেহ আমেরিকায় নিয়ে যাওয়া হয় এবং শিকাগোতে তাকে সমাহিত করা হয়। এবং ১৯৯৯ সালে তাকে স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার (মরণোত্তর) প্রদান করা হয়
দুখঃজনক হলেও সত্য আমরা অনেকেই ওনাকে প্রপ্য সম্মান দিচ্ছিনা। যদিও গুগল এব্যাপারে কার্পণ্য করেনি
স্যরের জন্মদিন উপলক্ষ্যে গুগল তাদের বিশেষ ডুডল প্রকাশ করেছে